সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত

» ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ

» আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া

» গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন 

» ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস

» জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন

» ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন

» ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’

» ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল

» ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”

» ফরহাদনগরে ছাত্রদল নেতা জিয়া উদ্দিনের ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পথে ঘুরছে বৃদ্ধা দুই অসহায় বোন

» বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটির পরিচিতি ও শিক্ষার মানোন্নয়নে সভা

» ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ

» ফেনীতে জলবায়ু পরিবর্তন ও সচেতনতা বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

» উত্তর চন্ডিপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি এম. আনোয়ারুল ইসলাম

» স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাবুর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া ও মিলাদ

» বাম গণতান্ত্রিক জোটের ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের রোডমার্চ ফেনী ছাড়লো- দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত 

» সাপ্তাহিক ফেনী সংবাদ এর প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

» ফেনীতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভে বক্তারা বলেন- মুসলিম ভূখণ্ডে হামলা করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা অসম্ভব

» ফেনী জেলা যুবদলের ৫১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা

সম্পাদক: শওকত মাহমুদ
মোবাইল: ০১৮১৩-২৯২৮৩৫
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মোজাম্মেল হক মিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: শাহজালাল ভূঁঞা
মোবাইল: ০১৭১৭-৪২২৪৩৫, ০১৮১৯-৬১৩০০৫

সহ-সম্পাদক: শেখ আশিকুন্নবী সজীব
মোবাইল: ০১৮৪০-৪৪৪৩৩৩
সম্পাদকীয় ও বার্তা কার্যালয়: শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতান(৬ষ্ঠ তলা), স্টেশন রোড, ফেনী-৩৯০০।
ই-মেইল: ajeyobangla@gmail.com

Desing & Developed BY GS Technology Ltd
৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,১৫ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেনীর দাগনভূঞার সিন্দুরপুরের দিলপুর কমিউনিটি ক্লিনিক- জমিদাতার ওয়ারিশেরাই করেছেন জবরদখল, পাশের খাসের ভূমিতেও পড়েছে নজর

অজেয় বাংলা রিপোর্টঃ

 

 

আজিজ উল্যাহ ও আনোয়ার উল্যাহ তারা দুই ভাই। এলাকার গরীব মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য দান করেন পাঁচ শতক জায়গা। তাদের দানকৃত জায়গায় ২৬ বছর আগে সরকারি অর্থায়নে গড়ে উঠে কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্তমানে ৭০৪ বর্গফুট আয়তনের ভবনটি ছাড়া অবশিষ্ট জায়গা কমিউনিটি ক্লিনিকের হাতছাড়া। ক্লিনিকের দক্ষিণ পাশের টয়লেটটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী এবং সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের প্রতিদিনই মুখোমুখি হতে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতির। ক্লিনিকের উত্তর পাশে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে একটি একচালা টিনের ঘর। তার পাশেই স্তুপাকারে রাখা হয়েছে ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত ইটভাঙ্গা। পূর্ব পাশে ক্লিনিকের জায়গা দখলে নিয়ে টিন দিয়ে রেখেছে ঘেরাও করে। দখলের ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয়। ক্লিনিক লাগোয়া দক্ষিণ পাশের ১২ শতক সরকারি খাস জমিতেও পড়ে তাদের লোলুপ দৃষ্টি। ওই জায়গাটিও এখন তাদের জবরদখলে। এই জবরদখলদার আর কেউ নন, কমিউনিটি ক্লিনিকের জমিদাতা মৃত আজিজ উল্যাহর তারা ওয়ারিশ হন। সরেজমিনে দাগনভূঞার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের দিলপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের এমনই চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
আজিজ উল্যাহর ওয়ারিশদের দাবি, অপরদাতা তাদের চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ তাঁর দানকৃত অংশ রেখে দিয়ে তাদের অংশ থেকেই পুরো পাঁচ শতক জায়গা কমিউনিটি ক্লিনিককে বুঝিয়ে দেয়। তবে তাদের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ। তিনি বলেন, তার ভাই আজিজ উল্যাহ জীবিত থাকতেই কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার দখল বুঝিয়ে দেন এবং তিনি নিজে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।


এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা বেদখলের বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা পরিমাপ করে সীমানা পিলার দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সীমানা পিলারও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে খাসের জায়গায় তৈরি ব্যক্তিগত রাস্তা থেকে ইটের সলিং তুলে নিলেও বাউন্ডারি ওয়াল ভাঙ্গা হয়নি। বরং নতুন করে লাগানো হয়েছে গাছের চারা। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের অসন্তোষ ও প্রতিবাদের মুখে তারা দোহাই দিচ্ছেন প্রশাসনের-এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন সরকারি খাসের জায়গার বন্দোবস্ত পেতে ক্লিনিকের জমিদাতা দুই ভাই আজিজ উল্যাহ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ দুজনই আবেদন করেন। কারোর অনুকূলেই খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি।
দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক একটি সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ক্লিনিকের জায়গা জবরদখল করা, ময়লা-আবর্জনাযুক্ত বস্তু পাশে ফেলে পরিবেশ দূষণ করা, এমনকি ক্লিনিকের সীমানা পিলার উপড়ে ফেলে দেওয়ার মতো যে ঘটনা ঘটেছে তা চরম ধৃষ্টতা। তিনি এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের দিলপুর গ্রামের মুন্সি রহমত আলীর দুই ছেলে আজিজ উল্যাহ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ এলাকার গরীব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে দিলপুর মৌজার বিএস ১১৭০ সাবেক ৪৬৮ দাগে আড়াই শতক করে পাঁচ শতক জায়গা ১৯৯৯ সালের ২৬ অক্টোবর দাগনভূঞা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ৫৭৪৭ নং দানপত্র দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। এরপর ওই অর্থ বছরেই স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু তখন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে গৃহীত স্বাস্থ্যবান্ধব এই প্রকল্পে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মাণ করা গেলেও চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ পরবর্তী সরকার এই প্রকল্পের কাজ আর এগিয়ে নেয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর উদ্যোগ নেয়। সেই সুবাদে ২০১১ সালে এই কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। একজন হেলথ প্রোভাইডর সপ্তাহের শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার এবং একজন পরিবার পরিকল্লনা সহকারী সপ্তাহে তিন দিন এখানে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ প্রোভাইডর আনিকা সুলতানা জানান, তারা এখানে জ্বর, সর্দি, কাশি, খোসপাঁচড়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। রোগীদের বিভিন্ন রোগের ২৯ রকমের ঔষধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এছাড়াও পরিবার পরিকল্লনা সেবা, টিকাদানসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবাও স্থানীয় এলাকাবাসী সহজে পেয়ে থাকেন বলে জানান তিনি।
সেবা নিতে আসা দিলপুর গ্রামের আনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। তার চার বছরের মেয়ে আয়েশা আক্তারের গত দুই দিন ধরে জ্বর। তাই মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। বাড়ির পাশে এই ক্লিনিক না থাকলে তাকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা জেলা সদর হাসপাতালে যেতে হতো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দাগনভূঞা উপজেলা সদর থেকে বেশ দূরত্বে অবস্থিত এই কমিউনিটি ক্লিনিক বিগত ১৫ বছর ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব-অসহায় লোকজনসহ সর্বস্তরের মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। এদিকে অভিযোগ উঠে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে ক্লিনিকের জমিদাতা মৃত আজিজ উল্যাহর ওয়ারিশেরা বহিরাগত লোকজন নিয়ে ক্লিনিকের জায়গা দখল করে একটি একচালা টিনের ঘর নির্মান করে এবং পাশে ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত কংকর স্তুপাকার করে রাখে। এতে করে ক্লিনিকের পাশে দুর্গন্ধ ছড়িয় পড়ে। বিষয়টি ক্লিনিকের অপর জমিদাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলামকে সভাপতি, প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মো. হারুন-উর রশিদ ভূঞাকে সদস্য সচিব ও এমটি মো. আবদুল কুদ্দুছকে সদস্য করে ঘটনার তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। গত ৪ মার্চ কমিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা বেদখল হওয়ার আশংকায় সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়ে গত ৫ মার্চ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে চিঠি দেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সদ্য বিদায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেরাজ শারবীন সরেজমিনে কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন এবং ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে ক্লিনিকের জায়গা পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে দিতে নির্দেশ দেন। পরে সার্ভেয়ার মো. শাহাব উদ্দিন জায়গা পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে দেন। এদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান, একই জবরদখলদারেরা কমিউনিটি ক্লিনিক লাগোয়া দক্ষিণ পাশে সরকারি খাসের ১২ শতক জায়গাও অবৈধভাবে দখল করে আছেন এবং ওই জায়গা ব্যক্তিগত চলাচলের জন্য ইটের সলিংয়ের রাস্তা তৈরি করে। সহকারী কমিশনার তৎক্ষণাৎ ইটের সলিং তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিলে তারা রাস্তা থেকে ইট তুলে নেয়। পরে দখলকৃত জায়গায় গাছের চারা লাগায়। এছাড়া দখলকৃত সরকারি খাসের জায়গা ঘিরে তোলা বাউন্ডারি ওয়ালটিও ভাঙ্গা হয়নি।
এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা পরিমাপ করে বসানো সীমানা পিলারও উপড়ে ফেলার অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজিজ উল্যাহর বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তার বাবা এবং চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ আড়াই শতক করে দুজনে মোট পাঁচ শতক জায়গা কমিউনিটি ক্লিনিককে দান করেন। কিন্তু তার চাচা নিজের অংশ বাদ দিয়ে তাদের অংশে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করতে দেয়। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের পুরো জায়গা তাদের বলে তিনি দাবি করেন। তিনি কমিউনিটি ক্লিনিককে তার বাবার দান করা আড়াই শতকের বেশি জমি দেবেন না বলে জানান। তিনি প্রস্তাব রাখেন বিএস ১১৭০ সাবেক ৪৬৮ দাগে আট শতক জায়গা রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের দক্ষিণে তাদের অংশে দেড় শতক এবং উত্তরে তার চাচার অংশে দেড় শতক ছেড়ে মাঝের পাঁচ শতক জায়গা কমিউনিটি ক্লিনিককে দিতে।
এদিকে ভাতিজার অভিযোগ ও প্রস্তাব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিককে আমাদের দুই ভাইয়ের দানকরা জায়গা সমানহারে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার ভাই জীবিত থাকতে তিনি নিজে ফেনী-সোনাইমুড়ি সড়কের পূর্ব পাশে দান করা জায়গার দক্ষিণ পাশে সরকারি খাস জমি লাগোয়া কমিউনিটি ক্লিনিককে জায়গা বুঝিয়ে দেন এবং তার বর্তমানে দক্ষিণে খাস জমি লাগোয়া কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হয় এবং তিনি এর ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আমার ভাই ২০২১ সালে মারা যান। ক্লিনিকের জায়গার দখল নিয়ে সমস্যা থাকলে তিনি তখন প্রশ্ন তুলতেন। কিন্তু তার অবর্তমানে তার ওয়ারিশদের এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি জানান, বাড়িতে তাদের ওয়ারিশি সম্পত্তি মোট ৪১ শতক। এরমধ্যে তারা দুই ভাই পাঁচ শতক জায়গা কমিউনিটি ক্লিনিককে দান করেন। অবশিষ্ট ৩৬ শতক সম্পত্তি তারা দুই ভাই সমানভাবে মালিক হওয়ার কথা থাকলেও তার মালিকানায় আছে ১৬.৪৫ শতক ভূমি। আর তার ভাইয়ের মালিকানায় আছে ১৯.৪২ শতক ভূমি। তিনি দাবি করেন, তার ভাইয়ের কাছে তার সম্পত্তি আরো পাওনা আছে।
তিনি জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গা জবরদখলের বিষয়টি তিনি ইতিমধ্যে চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকেও অবগত করেছেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার দখল ও জমিদাতা আজিজ উল্যাহর ওয়ারিশদের প্রস্তাবের বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জমিদাতা দুই ভাইয়ের নিজেদের মধ্যে পরস্পর বুঝাপড়া এবং তাদের সিদ্ধান্তের আলোকে কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার দখল বুঝে নেওয়া হয়েছে। পরে ওই জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি খাসের জমি লাগোয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার দখল নেওয়া হয়েছে এ কারণে ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিকের আধুনিকায়ন এবং তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আরো সহজতর ও গতিশীল করতে সরকারের নেওয়া কোনো সম্প্রসারণ কর্মসূচির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবকাঠামো নির্মাণে আরো জায়গার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য আট শতক জায়গার প্রয়োজন। এখানে জায়গা রয়েছে মাত্র পাঁচ শতক। পাশের সরকারি খাসের জায়গাটি কমিউনিটি ক্লিনিকের অনুকূলে বন্দোবস্ত পেতে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আবেদন করা হবে বলে তিনি জানান।
সিন্দুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুর নবী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবায় গ্রামের মানুষের জন্য আশীর্বাদ। সেবা বিঘ্নিত হয় এমন কর্মকাণ্ড কারো কাম্য নয়। তিনি তার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের সামনে জমিদাতা আজিজ উল্যাহর বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে কমিউনিটি ক্লিনিকের যে জায়গা তারা দখল করে রেখেছেন তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের দখলীয় জায়গার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আজিজ উল্যাহর ছোট ছেলে সাদ্দাম হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম, সিভিল সার্জন, অপর জমিদাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিবকে বিবাদী করে ফেনী জজ কোর্টের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। আগামী ২ জুন মামলার শুনানির তারিখ ধার্য্য আছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার পাশাপাশি পাশের সরকারি খাস জমির অবৈধ দখল বিষয়ে আজিজ উল্যাহর বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খাস জমির বন্দোবস্ত চেয়ে তাদের আবেদন করা আছে। বন্দোবস্ত পাওয়ার আগে খাসের জায়গা দখলে নিয়ে ব্যক্তিগত রাস্তা ও বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি এবং গাছপালা লাগানো কী ঠিক হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এসিল্যান্ড, ইউএনও ও ডিসি অবগত আছেন।
জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশে সরকারি খাসের জায়গার বন্দোবস্ত চেয়ে আজিজ উল্যাহ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার উল্যাহ তারা দুই ভাই আবেদন করেন। কাউকেই বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তিনি জানান, এসিল্যান্ড গিয়ে খাসের জায়গা থেকে ইতিমধ্যে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছেন। নতুন করে দখলের বিষয়টি তার জানা নেই।
কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গার অবৈধ দখল উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের সহযোগিতা চাইলে অবৈধ দখল উচ্ছেদে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



সম্পাদক: শওকত মাহমুদ
মোবাইল: ০১৮১৩-২৯২৮৩৫
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মোজাম্মেল হক মিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: শাহজালাল ভূঁঞা
মোবাইল: ০১৭১৭-৪২২৪৩৫, ০১৮১৯-৬১৩০০৫

সহ-সম্পাদক: শেখ আশিকুন্নবী সজীব
মোবাইল: ০১৮৪০-৪৪৪৩৩৩
সম্পাদকীয় ও বার্তা কার্যালয়: শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতান(৬ষ্ঠ তলা), স্টেশন রোড, ফেনী-৩৯০০।
ই-মেইল: ajeyobangla@gmail.com

Design & Developed BY GS Technology Ltd

error: Content is protected !!